বিষয় : মেটিয়াবুরুজের বাংলাভাষার সংকট
মন্থন সাময়িকীর মে–জুন ২০১৩ সংখ্যায় আসরাফ আলি গাজি ও শাকিল মহিনউদ্দিনের লেখা ‘মেটিয়াবুরুজের বাংলাভাষার সংকট’ নিবন্ধটা পড়ে কিছু ভাবনা উপস্থিত হয়েছে, সেগুলো প্রশ্ন আকারে রাখলাম$ এই বিষয়ে আরও বেশি যাঁরা জানেন, তাঁরা যাতে কিছু আলোকপাত করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই এই চিঠি$
মেটিয়াবুরুজের বাঙালি দর্জিসমাজের ভাষা, শব্দ ও উচ্চারণ–বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে আলোচনা শুরুর সময়ে লেখকরা জানিয়েছেন ওখানকার মিশ্র জনগোষ্ঠী কীভাবে গড়ে উঠেছে তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং তার পরে তাঁরা বলেছেন, ‘ফলে বাংলা, হিন্দি, আরবি, ফারসি, উর্দু, বর্মী, সিঙ্গাপুরি সমস্ত শব্দ মিশে একাকার হয়েছে এই জনসমাজের ভাষায়$ আর উচ্চারণ–বৈশিষ্ট্যে ও প্রকাশ ভঙ্গিমায় এই ভাষা এক স্বতন্ত্র্য মাত্রা পেয়েছে আমাদের মান্য কথ্য বাংলা থেকে$’তারপরের লাইনেই লিখছেন, ‘সুতরাং বিকৃতির ভাষা এই জনসমাজেরই সৃষ্টি$ সেই বিকৃতির ধারা এখনও বর্তমান$’অর্থাৎ, মান্য কথ্য যে বাংলা, লেখকদেরই ভাষায়, যে বাংলাকে ‘শিক্ষিত হিন্দুসমাজ অনুকরণ ও অনুধাবন সূত্রে নিজের ভাষার স্বকীয়তাকে গ্রহণবর্জনের মধ্য দিয়ে আরও সুচারুরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে’, সেই বাংলা ভাষা থেকে ‘নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে প্রকাশ করে মেটিয়াবুরুজ পৃথিবী নামক এক ভিনগ্রহের সনাতনপন্থী অধিবাসী হিসেবে স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছে$’পাশাপাশি তাঁরা দেখিয়েছেন, ‘অথচ মেটিয়াবুরুজের পাশেই অবস্থিত সন্তোষপুর, আকড়া, চটা, চড়িয়াল অঞ্চলের মুসলিম জনগণ হিন্দু বাঙালিদের সংস্পর্শে নিজেদের ও নিজের কথ্য আঞ্চলিক ভাষাকে অনেকটাই শুদ্ধিকরণ করতে পেরেছে$’